Sunday, December 25, 2011

শহরের গল্প

পক্ষপাতহীন নির্দোষ অথচ নির্বোধ ভালবাসায়,

দখল হয়ে যাওয়া হৃদয় নিয়ে

কংক্রিটের শহরে জীবন দাবি করেছি কত!

কত জন-ই বা জানে এই শহরেরও আছে

অন্যরকম এক জীবন,

তার মনেও কত দুঃখ

এই সভ্য নাগরিকেরা শুধু সুবিধাই ভোগ করতে জানে,

পাকা খদ্দেরের মতো শুধু ধর্ষণ করতে জানে

জানে না ভালবাসতে,

জানে না কাছে টেনে নিতে

প্রতিটি রাত প্রতিটি ভোর শেষে,

তাই একাকীত্বের পৌন:পুনিকতায় শহর ডুবে থাকে

সবকিছু যেন বৃত্তের মত,

এক বিন্দু থেকে শুরু হয়ে

অনেক পথ পাড়ি দিয়ে সেই শুন্যে ফিরে আসে

অচেনা তবুও শহরের অনেক আপন এইসব মরীচিকা,

তার দোহাই দিয়ে আমরা পেয়ে যাই নাগরিক জীবন

নির্জনতার কোলাহল

এখানে এখন বাস করে অদ্ভুত এক নীরবতা,

কোলাহলময় নীরবতা

ফিসফিস করে তারা সাক্ষী দেয়,

অতীতের প্রতারণার কিংবা নিজের ভ্রান্ত আশার।

তারা বলে যায় সেই সব প্রতিশ্রুতির কথা,

যা দেখিয়েছিল বিস্মৃত সময়।

পরিচিত স্পর্শগুলো দীর্ঘশ্বাস হয়ে,

ছায়ার শরীর তাড়া করে ফেরে

নিঃশব্দেই রাতগুলো দীর্ঘ হয়ে যায়,

মহাকালের বিশাল মঞ্চে নিপুণ নাটক চলে মনুষ্যত্বের

আর এই ব্যস্ত নগরের পিচঢালা পথে

আমার প্রার্থনাগুলো নিয়ত পিষ্ট হতে থাকে,

সময়হীনতায়, ক্রমশঃ অসম্ভব বাস্তবতায়

অচেনা স্পর্শ

তবুও কিছু স্পর্শ অনুভূতির বাইরে রয়ে যায়

বোবা চিৎকার,

অশ্রুহীন কান্নার মতো

পলাতক সময়ের খোঁজে হারায় ভালবাসা,

গুটি গুটি পায়ে দরজায় দাঁড়ায় অতীত

ঝাপসা চোখে শুধু কিছু বৃষ্টির ফোঁটা ধরা দেয়,

অলস শরীর যেন হার মানতেই অপেক্ষায় ছিল

দেবতার ঘুম আর ভাঙায় না প্রার্থনার তোড়জোড়

অচেনা সেই স্পর্শগুলো,

অচেনা সেই স্বর্গ,

বিছিন্ন দ্বীপের মতো ভেসে বেড়াতে থাকে

একাকীত্বের সংজ্ঞায়

অসংলগ্নতার উপলব্ধি

কিছু অনুভূতি শব্দ দাবি করে,

কিছু দুঃখ অশ্রু হতে চায়,

আর কিছু শুন্যতা খুঁজে ফেরে তার উপস্থিতি

এসব ভবঘুরে ভাবনায় পথ হারায় অদ্ভুত আমার সত্ত্বা,

চেয়ে দেখি,বাতাসে ভেসে বেড়ায় শব্দগুলোর ছায়াশরীর

বৃষ্টি হয়ে ঝরে যায় কিছু দুঃখ,

প্রার্থনাগুলো ধুঁকতে থাকে অস্বীকৃতির যন্ত্রনায়

তবুও বলা হয়না অনুভূতির নীরব ইচ্ছে,

বোঝা হয়না শুন্যতায় ডুবতে থাকা অস্তিত্বটাকে।

ক্রমশঃ এভাবেই কি হারিয়েছি আমার আমাকে?

খেয়ালি আবেগের হেঁয়ালিপনায়

কারণে অকারণে জীবনের স্বাদ বদলাতে থাকে

ভাবনাদের মুক্তি দিয়ে আমি-

এসব নাটক দেখে যাই

কখনো দর্শক, কখনোবা অভিনেতা হয়ে।

অসাড়তা

চলতে হবে তাই চলছি

বলতে হবে তাই বলছি

স্বপ্ন দেখতে হয় তাই দেখছি

হোঁচট খেতে হয় তাই খাচ্ছি

বাঁচতে হবে তাই বেঁচে আছি

থামতে হবে তাই হয়তো একদিন...

থেমে যাবো।

নির্ঘুম কবিতা

অন্তহীন রাত্রির সম্মোহনে,

জেগে থাকে অস্পষ্ট কিছু আবেগ

লোডশেডিং-এ চেনা রাস্তায়,

দু’একবার আলগা হোঁচট খেয়ে বাড়ি ফেরে স্বপ্নেরা

অনেকদিন আর অনেকগুলো রাতের পর,

কিছু ঝাপসা স্মৃতি আবার মঞ্চায়িত হয়

অস্তিত্বহীন অতীত আর অধিকারহীন ভবিষ্যতে,

আমার বর্তমান ফ্যাকাসে হতে থাকে

জোছনার মায়া বাড়তে থাকে রাতভর,

আমি জেগে থাকি সেই মায়ায় হারিয়ে

হারানোর অজুহাত

তুমি আছো জেনে আমি বাঁচিয়ে রেখেছিলাম,

কিছু স্মৃতি...

ক্লান্তিহীন নির্ঘুম রাত কাটিয়েছিলাম,

জোছনার মায়াকে আপন করে

শেষ বাসে করে বাড়ি ফেরার পথে,

গান গেয়েছিলাম বেসুরে

তখনো শুন্যতা ছিল পরিচিত বিস্ময়ে,

ছিল শেয়ারবাজারের লাগামহীন দরপতন

তবুও তুমি আছো জেনে আমি

বাঁচিয়ে রেখেছিলাম আমাকে

সেইসব আলোকবর্ষ পার করে দিয়ে,

এখন একাকীত্ব বেঁচে থাকে মাথা উঁচিয়ে

আমি আর বাঁচিয়ে রাখতে পারিনি

পরাজিত আমাকে

আনমনে

যদি আবারো ইচ্ছে হয় আনমনে,

জোছনায় একসাথে পথ হারাতে

অথবা সময়টাকে একটু থামাতে,

আমায় ভেবো তুমি চোখটা বুজে

জানবে তুমি আমি মানে কষ্ট নয়,

স্বপ্ন মানেই দুঃস্বপ্ন নয়

চাইতে পারো পুরানো সেই কবিতা,

কিংবা অসমাপ্ত গল্পের শুরুটা

কিছুই হয়তো পাবে না তার,

পাশে থাকবে নীরব,নিঃস্ব আঁধার

স্বার্থপর আমি ভেবে নিব আমার না থাকার শুন্যতা,

আমার একঘেয়ে অস্তিত্বের সফলতা...