Monday, February 28, 2011

অচেনা কাব্য

অনুভূতির প্রাচীর ভেঙ্গে

চিৎকার করে কিছু শব্দ

কিছু আশা আর অনেকটা হতাশা

নির্জনতার রাজ্যে লুটপাট করে তারা

শুন্যতা জুড়ে ভ্রান্ত মায়ার অবাধ বিচরণ,

উত্তাল হাওয়ায় উড়ে বেড়ায় ইচ্ছে ঘুড়ি,

নিয়মের কারাগারে এ কি বিদ্রোহ আজ?

ভাবনাগুলো সব নিয়েছে ছুটি,

সাথে তোমার আর আমার না বলা কথা

ফানুস হয়ে ভেসে যায় দিগন্তের সীমানায়

ছায়ারা বাড়তে থাকে অবিরত,

অলস দুপুর দোহাই দেয় ব্যস্ত জীবনের,

নীরবে চেয়ে চেয়ে দেখি এ সবই,

দেখি বড় অচেনা অপরিচিত আবেগগুলোর মিছিল।

বড় নির্বোধ একই সাথে বড় আশাবাদী আমি।

কিছুটা বুঝে অনেকটা না বুঝে,

সুখী হয়ে চলি,

নাহয় থাকলই বা কিছুটা অচেনা আবেগ।

তাতে কিইবা আসে যায় তার?

Wednesday, February 23, 2011

বিস্ময় জীবন

আজ আমার ইচ্ছে হল আবার ফিরে যেতে,
ফিরে যেতে আমার শৈশবে,
যা ছিল শুধুই আমার।
নাটাই ধরে উড়ানো স্বপ্নের ঘুড়ি,
স্কুল পালিয়ে রেললাইন ধরে অনন্ত পথচলা,
ধুলোর রাজ্যে গড়াগড়ি খাওয়া,
মায়ের বকুনিতে অভিমানে ডুবে থাকা,
আবার সেই মায়ের স্নেহের কোলে ঘুমিয়ে পড়া,
বাবার হাত ধরে ‘বড় বড়’ ভাবে ঘুরে বেড়ানো,
ঘুরে ঘুরে রঙিন জগৎ দেখা।
এখন আমি অনেক বড়!
তোমাদের এই পৃথিবীতে বড় হওয়া
বড়ই ঝামেলা!
কৃত্রিম আবেগ কৃত্রিম ভালবাসা,
কর্পোরেট জীবনযাত্রা।
ভালো না থেকেও ভালো থাকার অভিনয়,
হিসেব করে কথা বলা,
হিসেব করে ভালো লাগা,
নিঃস্বার্থ স্বার্থপরতা।
আনন্দ দুঃখ নয়,
এই জীবন এখন বিস্ময়ের।

Tuesday, February 22, 2011

আমার দেশ

পেয়েছি অনেক কিছু,

লাল সবুজের এই বাংলাদেশ।

পেয়েছি স্বপ্ন দেখার অবাধ স্বাধীনতা,

মায়ের মত মধুর এক বাংলা ভাষা।

সবুজ সবুজে ছেয়ে যাওয়া প্রান্তর,

তার মাঝে লুকিয়ে থাকা মমতার ঘর।

শিরায় শিরায় বয়ে চলা নদীগুলো,

সোনার তরীতে ভাসিয়ে নেয় সব দুঃখ।

সাগরের ঐ বিশালতায়,

মনের মেঘগুলো চিরতরে হারায়।

শ্রাবনের অঝোর বর্ষণে,

ভিজে যাই; ভুলে যাই যা ভোলার।

সাদা কাশবন,সাদা চাঁদের আলো,

সাদার মিছিলে স্লোগান উঠে সুখের।

এতো কিছু পেয়েও প্রায়ই বলি,

দিয়েছ কি হে দেশ তুমি?

আসলে অকৃতজ্ঞতার ভারে নুহ্য হয়ে

বড় ভয়ে ভয়ে থাকি...

যদি আমার দেশ কথা বলতে পারে?

যদি জিজ্ঞেস করে কি দিয়েছি তাকে আমি?

বাস্তব কল্পনা

তুমি নামের কল্পনা,

বাস্তবতাও থমকে দেখে যাকে

অস্তিত্বের অমোঘ আহবানে,

হারিয়ে খুঁজি আমার তোমাকে

সাথে থাকে রাতের তারা,

আর কিছু জোছনা...কিছু অদেখা ভালবাসা

পথ হারা পথিক আমি,

বেসুরো গানের গায়ক...ছন্দহীন কবিতার কবি

দুঃখগুলো যেন উপহাস করছে,

আর সুখগুলো তো কবেই গিয়েছে ছেড়ে

এখন একা আমি, বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হয়ে,

নিজের ভেলায় ঘুরে বেরাই ভ্রান্ত মনে।

সবার মতো নই আমি, আমার মতো আমি,

তাই আমার নতুন আমাকে আবার ভেঙ্গে গড়ছি

হয়তো কড়া নেড়েছি ভুল জানালায়,

কিন্তু কড়া নাড়তে তো জেনেছি!!

Tuesday, February 15, 2011

অন্তহীন যাত্রা

হেঁটে চলেছি নিয়ত,
পরিচিত পথে,
অপরিচিত মুখের ভিড়ে।
ক্লান্তি আমায় ছুঁয়ে যায় না,
অবশ আমার অনুভূতি,
ইচ্ছেগুলো সব নিয়েছে ছুটি।
অলস দুপুরগুলো অলস থাকে না,
আকাশের মন কেমন তা হয়না জানা।
‘বহু বিদ্রোহ দিয়েছে মনের প্রান্ত নাড়া,
তবু হতবাক দিই নি সাড়া’।
নীরবে চেয়ে থাকি ফেলে আসা পথের দিকে,
হাজার মানুষের ভিড়েও একা আমি।
মনের মাঝে প্রশ্নের মিছিল,
কেউ কেউ করে এক দফা এক দাবি।
কতটা জেনেও কি অসহায় আমি!
অসীম সম্ভাব্যতার সীমাবদ্ধতায় থমকে থাকি,
ঐ বিশাল নীল আকাশটাও তার মাঝে ছোট হয়ে যায়,
তাই এখন বড় হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয়...
তোমার থেকে দূরে,
নিজের থেকে অনেক দূরে.....

Sunday, February 13, 2011

১৪ই ফেব্রুয়ারী বলতে যা জানি...

১৪ই ফেব্রুয়ারী...কতটাই বা জানি আমরা?বিশ্বায়নের জোয়ারে তরুন সমাজে এই দিনকে জেনেছে ভালবাসা দিবস হিসেবে।১৪ই ফেব্রুয়ারীতে দেখা যায় প্রেমের(!!) জোয়ার।মোবাইল কোম্পানিগুলো নতুন নতুন অফার দেয়,বিভিন্ন চ্যানেলে প্রদর্শিত হয় ভালবাসার নাটক।এই দিনটির যে আমাদের জীবনে বিশেষ একটি তাৎপর্য রয়েছে তা আমরা অনেকেই জানিনা।

১৯৮২ সালে তৎকালীন সেনাপ্রধান লে.জে.হু.মু এরশাদ ক্ষমতা দখল করে। সামরিক শাসন আরও একবার কায়েম করা হয়। এরশাদ আর সব ক্ষেত্রের সাথে শিক্ষা ব্যবস্থা নিজের মনের মতো সাজানোর কাজে নামে।শিক্ষা বিষয়ে তার অনুরাগ ছিল ব্যাপক।কাব্যপ্রতিভার কথা নাই বা বললাম।যাক,সে ঠিক করল শিক্ষানীতি ঢেলে সাজাবে। ধর্মের মতো সংবেদনশীল ইস্যুকে সে ব্যবহার করল হাতিয়ার হিসেবে। প্রথম শ্রেণী থেকে আরবি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।এছাড়া উচ্চশিক্ষায় সবার অধিকার ক্ষুণ্ণ করা হয় এর সাথে অর্থের আবশ্যকতা জুড়িয়ে দিয়ে।

তখন সরকারের সকল সমালোচনা করা ছিল শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এবং এ অপরাধ করার দুঃসাহস দেখায় ছাত্রসমাজ। প্রস্তাবিত শিক্ষানীতির বিরুদ্ধে নেমে পড়ে ছাত্ররা। নভেম্বর থেকেই আন্দোলন জোরালো হতে থাকে। ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ সরকারকে প্রথমে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের দাবি জানায়। এর উত্তরে শুরু হয় গ্রেপ্তার,নির্যাতন। পরিষদ ঘোষণা দেয় তারা তাদের দাবি আদায়ের লক্ষ্যে একুশে নতুন উদ্যমে পালন করবে। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে ছাত্রদের বিপুল বিরোধিতার বহিঃপ্রকাশ দেখতে পায় এরশাদচলতে থাকে গ্রেপ্তারপর্ব।

১৯৮৩ সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারী বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেয় ছাত্রসংগ্রাম পরিষদ। সেদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের হাজার হাজার ছাত্র সমবেত হয়েছিল কলাভবন ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলোতে। তাদের সমুদ্র এগিয়ে চলে সচিবালয় অভিমুখে। মিছিল হাইকোর্ট পৌঁছাতেই পুলিশ হামলে পড়ে তাদের উপর। চালান হয় গুলি। প্রায় ১০-১২ জনের নিহত হবার খবর পাওয়া যায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়, জারি করা হয় কারফিউ। কিন্তু এ ঘটনার পর আন্দোলন আরও তীব্র হয়। চট্টগ্রাম রাজশাহী সহ পুরোদেশে ছড়িয়ে যায় এ আগুন। অবশেষে ১৭ ফেব্রুয়ারী সরকার ঘোষণা দেয় জনমতের বিরুদ্ধে যেয়ে কোন শিক্ষানীতি প্রণয়ন করা হবে না।

স্বাধীনতা-উত্তর বাংলাদেশে এটিই ছিল সর্বপ্রথম স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন। কিন্তু গঙ্গার জল বহুদুর গড়িয়েছে। আজ দেখা যায় তৎকালীন স্বৈরবিরোধী আন্দোলনের প্রধান দুই নেত্রীকে সেই স্বৈরশাসককে নিজ নিজ জোটে টানার আকুল প্রচেষ্টা। সেই এরশাদ যেন আজ ক্ষমতা আরোহণের সিঁড়ি!!

গণমাধ্যমগুলোতেও এর ছাপ দেখা যায়। ১৪ই ফেব্রুয়ারীর এই ইতিহাস তাই কোথাও লেখা হয় না। নতুন প্রজন্ম আমাদের সাহসিক এই আন্দোলনের কথা হয়তো জানতেই পারবে না। ছাত্র আন্দোলনের গৌরবময় সময়গুলো একদিন রুপকথা মনে হবে তাদের। এখন ১৪ই ফেব্রুয়ারী মানে কোন অনুপ্রেরনাদায়ী দিবস নয়, অন্যের দেখিয়ে দেয়া ভালবাসা দিবস। টিভি-পত্রিকা সর্বত্র চলে ভালবাসার আহ্বান। ভালবাসাকে পণ্য বানিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে মুক্তবাজারে।

আধুনিকতা মানে নিজের অস্তিত্ব বিকিয়ে দেয়া নয়, বরং নিজের মূলকে জোরালো করে এগিয়ে যাওয়া। এ মর্ম আমাদের উপলব্ধি করতে হবে।

Friday, February 11, 2011

পরাজিতের প্রতিজ্ঞা

যেতে চাই বহুদুরে,
স্বপ্নের সীমানা পেরিয়ে আরো দূরে।
সব বাঁধা সব কষ্টকে হারাতে হবে,
হারাতে হবে নিজেকে।
অনেক হয়েছে হেরে হেরে বেঁচে থাকা,
অনেক হয়েছে অহেতুক ভালবাসা।
এবার আমি গড়তে চাই নিজেকে,
তোমার মত নয়,নিজের মত করে।
নির্জন রাতে তারার মতো আলো জ্বালিয়ে,
পথ দেখাবো পথহারাদের।
তোমার শোষণের ভয়াল জাল ছিঁড়ে,
মুক্ত করবো এ সমাজকে।
‘অনেক নিয়েছ রক্ত দিয়েছ অনেক অত্যাচার,
আজ হোক তবে তোমার বিচার।
তুমি ভাব তুমি শুধু নিতে পার প্রাণ,
তোমার আছে ক্ষমতার কামান।
জানো নাকি আমাদেরও উষ্ণ বুক,রক্ত গাঢ় লাল,
পেছনে রয়েছে বিশ্ব,সাক্ষী মহাকাল।’

Monday, February 7, 2011

রাজনীতি

“হরতাল সফল করায় জনগণকে ধন্যবাদ”!

“হরতাল ব্যর্থ করায় জনগণকে ধন্যবাদ”!

যা কিছু হোক আমজনতা ধন্যবাদ পেতেই থাকবে

কেউ ভেবে দেখে না

কিবা পেল জনগণ আর কিইবা হারালো...

সবাই ব্যস্ত নিজের হিসেব মেলাতে

কোথায় গেল সেইসব আশ্বাস প্রতিশ্রুতি?

ট্রাফিক জ্যাম আর লোডশেডিং

সাথে ফ্রী মিলছে সরকারি বেসরকারি সন্ত্রাসী,

এর মাঝে সব ছাপিয়ে বড় হয়ে যায় একটি বাড়ি

ক্ষুধার্তের পেটে ভাত যোগানোর নেই ভাবনা,

চিন্তা কেবল নামকরন এবং ডিজিটাল কল্পনা

দল বদলায়...

কিন্তু সরকারের আচরন বদলায় না

মুজিব কোট থেকে সাফারি,

সবাই করে নিজের পকেট ভারি।

মাঝখানে কেঁদে মরে

নামজানা নাম না জানা হতভাগ্য মানুষের দল

স্বৈরাচার আর গণতন্ত্র এক হয়ে যায় ক্ষমতার মোহে,

বিভ্রান্ত মানুষ চেয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে।

কোনটা সত্য কোনটা মিথ্যে বোঝা বড় দায়,

‘সকল ক্ষমতার উৎস’ জনগণ শুধু ধোঁকা খেয়ে যায়।

Friday, February 4, 2011

প্রশ্ন

আজ এসেছি তোমাদের কাছে

কিছু প্রশ্নের জবাব জানতে,

দিতে কি পারো আমার প্রশ্নের উত্তর?

স্বাধীনতার ৪০বছর পর

আজো কেন স্বাধীন হতে পারিনি?

বায়ান্নর ৬০বছর পর

আজো কেন বাংলা নীরবে কাঁদে?

কেন সরকার মানেই জনবিচ্ছিন্ন শাসকদল?

কেন রাজনীতি হয়ে গিয়েছে রাজার নীতি?

কেন সুবিশাল অট্টালিকার আভিজাত্য

পাশের বস্তির দারিদ্রতাকে উপহাস করে?

কেন আমি থেকে আমরা হতে পারছি না সবাই?

পহেলা বৈশাখ মানে আজ ইলিশ-পান্তা,

বাংরেজি হল আধুনিকতা।

বিনয় মানে দুর্বল,

এবং উদ্ধত হলে ভাল

দুর্নীতিই আমাদের মূলনীতি,

ভেবে দেখেছ কখনো কি?

Wednesday, February 2, 2011

স্বপ্নের উপাখ্যান

স্বপ্ন...

কেন যেন দেখতে খুব ভালবাসি এই আমি,

চোখ খোলা কিংবা বন্ধ

সবসময়ই আমরা একসাথে পথ চলি।

শৈশবে ছিল দুরন্ত সব ভাবনা..

বাবা থেকে রূপকথার সেই যুবরাজ,

সবার মতো হওয়ার কল্পনা

ক্ষণে ক্ষণে রূপ বদলানোই ছিল তখন স্বপ্নের কাজ।

কৈশোর কাটল আরও রঙিন

মাথায় খেলত একটাই চিন্তা

আর্মি অফিসার হব কোনদিন?

উর্দি চেপে সিভিলিয়ানদের নিশ্চিন্তে দিব থাবড়া।

অতঃপর এলো যৌবন...

দেশ-সমাজের সকল চিন্তা পড়ল ঘাড়ে

আদর্শ তখন লেনিন-তাজউদ্দিন

সেকি ঝড় উঠত চায়ের কাপে।

ভুলিনি আমি কোন স্বপ্নকে

বরং স্বপ্নই ভুলেছে আমাকে,

তাও ছাড়িনি কেউ কাউকে...

নিত্যনতুন রূপে সে ফিরে আসে আমার কাছে।

শত দুঃখ কষ্টের ভিড়ে,

আমার স্বপ্নগুলোই বাঁচিয়ে রাখে আমাকে।

প্রলাপ

শব্দগুলো কেমন যেন বারবার পথ হারিয়ে ফেলছে।

হয়তো আমিও...

আজতো অন্যরকম কোন দিন নয়,

বাড়ি ফিরেছি সেই পরিচিত লাস্ট বাসে

সূর্যের দেখা আজো মেলেনি...

তাতে কি বা আসে যায় আমার কিংবা সূর্যের?

চাঁদ তো দেখেছি!

জোছনার আলোয় নাকি পৃথিবীকে আরো মায়াময় দেখায়!

মায়া নাকি ছলনা?

বিমূর্ত সময় বয়ে চলে সব প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে।

আমিও এগিয়ে যাই তার সাথে...

কাটছে সময় কাটুক।

প্রতিদিন মনে হয় ধ্যাত এটা কি জীবন!

মনের অজান্তেই এ ভাবনাও এখন গা সওয়া

যাচ্ছে দিন যাক,

কিছু হিসেব নাহয় বেহিসেবি হয়ে থাকুক...

বেচারা জীবন একটু হাঁফ ছেড়ে বাঁচুক।

পুরানো স্মৃতি

ভেবেছিলাম আর দুঃখ করব না,

তোমাকেও অকারণ বিরক্ত করব না তথাকথিত পুরানো কাসুন্দি ঘেঁটে।

কিন্তু এই নির্বোধ মন শুনে কার কথা?

তাই আবারো বসলাম আমার স্মৃতির পসরা সাজিয়ে।

তোমার ঘুমের অন্ধকার পথ বেয়ে,

হেঁটে চলে আমার স্বপ্ন কিংবা দুঃস্বপ্নের দল।

নিজেই নিজেকে বারবার প্রশ্ন করে

ভালবাসা কি ছিল তা নাকি কেবলই ছিল ছল!

যখন তোমার চোখে

অবিরত খুঁজে যেতাম নিজেকে

কিসের ছায়া দেখতে পেয়ে

ভাবতাম এইতো আমি,আর কি চাই এই জীবনে?

কিছু ভুল ছিল বৈকি,ছিল অকারণ মান-অভিমান

সুনিশ্চিত ভবিষ্যৎ চাওয়ার আগে যা ছিল ভালবাসার প্রমান

তাহলে কে জয়ী কে পরাজয়ী কেইবা হল মহান?

আমি না থাকলেই কি হল সব মুশকিল আসান?

একদিন হয়ত পুরানো স্মৃতির ভিড়ে

ফিরে আসব এই আমি,

শরীরে কিংবা অশরীরে...

সেদিন বুঝবে কেন ভালবাসা সবথেকে দামি।

একটি ছিঃনেমা

কাল রাতে রু ঘুমাতেই পারেনি। মাথায় নতুন আইডিয়া এসেছে। নিউরনগুলো যুদ্ধ করছে রীতিমতো। চলচিত্র নির্মাণের স্বপ্ন তার বহুদিন পুরনো। কনসেপ্ট ঠিক করা যাচ্ছিল না কেবল। অবশেষে বিধ্বংসী একটি প্লট পাওয়া গেলো। এইবার বলদ বাঙ্গালিগুলোকে আবার ঘোল খাওয়ানো যাবে। আর ফ্যাক্টর অফ সেফটি হিসেবে তো কিছু মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী বন্ধুরা রয়েছেই। পাবলিক সোজাভাবে না খেলে তারা প্রসেস করে খাইয়ে দিবে। মোটকথা শিওর সাকসেস আইডিয়া।

রু বেশকিছুকাল গবেষণা করেছিল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। আইডিয়াটিও ৭১ নিয়ে, তা হল পাকিসেনার সাথে বাঙালি ললনার প্রেমকাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন আঙ্গিকে অনেক মুভি হলেও এই ধারণা একদমই নতুন। ফ্রী হিসেবে থাকবে মুক্তিযুদ্ধকে গণ্ডগোল নাম দেয়া,এক বাঙালি তরুণীর ধর্ষণকে অতিসহজে গ্রহন করা,মুক্তিসেনাদের ভীতু রূপ দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। কিছু বিবেকবান হয়ত চেঁচামেচি করতে পারে কিন্তু তাতে সিনেমার কাটতি আরও বাড়বে। বেশ্যা বুদ্ধিজীবীর দল তালি বাজানো শুরু করবে। আখেরে সফলতা সুনিশ্চিত।

তারপর শুরু হল নির্মাণকার্য। পরিকল্পনামতো শেষ হল সবকিছু। সরকারি লোক বলে সেন্সর বোর্ড স্যালুট করল। ঘটা করে মুক্তি পেলো সিনেমা। এবং যা ধারণা করেছিল রু তা সবই হতে থাকল। খবরের কাগজে তোলপাড়। অনেক যুক্তি অনেক তর্ক। সব দেখে বেঁচে থাকা মুক্তিসেনারা আরো একবার মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে ফেরে, শহীদদের আত্মা নিভৃতে কেঁদে যায়। নতুন প্রজন্ম আবারো ইতিহাসের বৈচিত্র্যতা দেখে বিভ্রান্ত হয়। রু হাসে মুখ টিপে।

এই কাহিনী হয়ত আরো বাড়ানো যাবে,কিন্তু তাতে রু-র মত পরজীবী প্রাণীগুলো শুধু বাড়তেই থাকবে। এদের প্রশ্রয় দেয়া মানে মুক্তবিতর্কের নামে প্রকৃত ইতিহাস হত্যা করা। পরবর্তী করনীয় নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না।