কাল রাতে রু ঘুমাতেই পারেনি। মাথায় নতুন আইডিয়া এসেছে। নিউরনগুলো যুদ্ধ করছে রীতিমতো। চলচিত্র নির্মাণের স্বপ্ন তার বহুদিন পুরনো। কনসেপ্ট ঠিক করা যাচ্ছিল না কেবল। অবশেষে বিধ্বংসী একটি প্লট পাওয়া গেলো। এইবার বলদ বাঙ্গালিগুলোকে আবার ঘোল খাওয়ানো যাবে। আর ফ্যাক্টর অফ সেফটি হিসেবে তো কিছু মিডিয়া ও বুদ্ধিজীবী বন্ধুরা রয়েছেই। পাবলিক সোজাভাবে না খেলে তারা প্রসেস করে খাইয়ে দিবে। মোটকথা শিওর সাকসেস আইডিয়া।
রু বেশকিছুকাল গবেষণা করেছিল মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। আইডিয়াটিও ৭১ নিয়ে, তা হল পাকিসেনার সাথে বাঙালি ললনার প্রেমকাহিনী। মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন আঙ্গিকে অনেক মুভি হলেও এই ধারণা একদমই নতুন। ফ্রী হিসেবে থাকবে মুক্তিযুদ্ধকে গণ্ডগোল নাম দেয়া,এক বাঙালি তরুণীর ধর্ষণকে অতিসহজে গ্রহন করা,মুক্তিসেনাদের ভীতু রূপ দেয়া ইত্যাদি ইত্যাদি। কিছু বিবেকবান হয়ত চেঁচামেচি করতে পারে কিন্তু তাতে সিনেমার কাটতি আরও বাড়বে। বেশ্যা বুদ্ধিজীবীর দল তালি বাজানো শুরু করবে। আখেরে সফলতা সুনিশ্চিত।
তারপর শুরু হল নির্মাণকার্য। পরিকল্পনামতো শেষ হল সবকিছু। সরকারি লোক বলে সেন্সর বোর্ড স্যালুট করল। ঘটা করে মুক্তি পেলো সিনেমা। এবং যা ধারণা করেছিল রু তা সবই হতে থাকল। খবরের কাগজে তোলপাড়। অনেক যুক্তি অনেক তর্ক। সব দেখে বেঁচে থাকা মুক্তিসেনারা আরো একবার মুখ লুকানোর জায়গা খুঁজে ফেরে, শহীদদের আত্মা নিভৃতে কেঁদে যায়। নতুন প্রজন্ম আবারো ইতিহাসের বৈচিত্র্যতা দেখে বিভ্রান্ত হয়। রু হাসে মুখ টিপে।
এই কাহিনী হয়ত আরো বাড়ানো যাবে,কিন্তু তাতে রু-র মত পরজীবী প্রাণীগুলো শুধু বাড়তেই থাকবে। এদের প্রশ্রয় দেয়া মানে মুক্তবিতর্কের নামে প্রকৃত ইতিহাস হত্যা করা। পরবর্তী করনীয় নিশ্চয়ই বলার অপেক্ষা রাখে না।
No comments:
Post a Comment